অঙ্কুশ হাজরা এবং স্যান্ডি সাহা। এক জন টলিপাড়ার প্রথম সারির অভিনেতা, অন্য জন কলকাতার বিখ্যাত ইউটিউবার। প্রথম জন ইতিমধ্যেই বাংলার দর্শকের মন জয় করেছেন বড় পর্দায়। এই মুহূর্তে জি বাংলায় ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর সঞ্চালকের ভূমিকায় দেখা যায়। দ্বিতীয় জন নেটাগরিকদের চোখের মণি। যিনি ‘এমটিভি’-র জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘রোডিজ’ মাতিয়ে এসেছেন। এই দুই শিল্পীর মধ্যে বিবাদ এখন প্রকাশ্যে।
মাস খানেক আগে এক সংবাদ মাধ্যমে স্যান্ডি অঙ্কুশের প্রতি তাঁর সমস্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, অঙ্কুশ তাঁকে হিংসা করেন এবং ভয় পান বলে ফেসবুকে ব্লক করে দিয়েছেন। কেবল তাই নয়, স্যান্ডি বলেছিলেন, ‘‘অঙ্কুশ আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে দেবেন না।’’
কিন্তু এই বিষয়ে অভিনেতা অঙ্কুশ এর আগে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। আনন্দবাজার অনলাইন তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়ায় তিনি বললেন, ‘‘ফেসবুক আমি নিজে সামলাই না। আমি কয়েক জনকে নিযুক্ত করেছি, তাঁরাই আমার ফেসবুক প্রোফাইলের দায়িত্বে রয়েছেন।’’ অঙ্কুশ জানালেন, তিনি কাউকে ব্লক করেন না। খ্যাতনামী হওয়ার পর থেকে তিনি একাধিক বার নেটমাধ্যমে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু এ সব বিষয় তাঁর কাছে তুচ্ছ। অঙ্কুশের কথায়, ‘‘খারাপ কথা কম শুনি না আমি। তার জন্য কাকে কাকে ব্লক করব? আর এই ব্লক করার অভ্যেস আমার নেই। আমি আজ পর্যন্ত কাউকে ব্লক করিনি। তবে হ্যাঁ ফেসবুকের বিষয়ে আমার কাছে খুব বেশি তথ্য নেই। ওটা আমার দল দেখে।’’
ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ না দেওয়ার হুমকির বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে অঙ্কুশ জানালেন, তিনি অত প্রভাবশালী নন যে তাঁর কথায় লোকে স্যান্ডিকে কাজ দেবে না। তবে অভিনেতা একইসঙ্গে এও জানালেন, কোনও ছবিতে যদি তাঁদের দু’জনকে কাস্ট করা হয়, সে ক্ষেত্রে তাঁর অস্বস্তি হলে তিনি অন্য ভাবে নিজেকে সরিয়ে আনবেন। অঙ্কুশের কথায়, ‘‘যদি মনে করি স্যান্ডির সঙ্গে কাজ করতে স্বচ্ছন্দ নই, তবে প্রযোজক বা পরিচালককে গিয়ে বলব, আমাকে এই ছবি থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু আমি কখনওই ওঁর কাজের ক্ষেত্রে পথ আটকাব না।’’
প্রসঙ্গত, ‘ম্যাজিক’ ছবির মুক্তির পর অঙ্কুশ তাঁর সামাজিক পাতায় ছবিটির সাফল্য নিয়ে লিখেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘হই হই করে চলছে ছবিটি।’ সেখানেও অঙ্কুশকে আক্রমণ করেছিলেন স্যান্ডি। মন্তব্য বাক্সে ছবি দিয়ে দেখিয়েছিলেন, কেবলমাত্র একটি হলে সেই ছবিটি দেখানো হচ্ছে। স্যান্ডির দাবি ছিল, কেবলমাত্র অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার পরিবারের সদস্যরা সেই ছবি দেখেছেন। সেই প্রসঙ্গে অঙ্কুশ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “আমার আর ঐন্দ্রিলার পরিবার এত প্রভাবশালী বুঝি? তাঁরা একটা ছবিকে এত সফল বানিয়ে দিতে পারল? তা হলে তো এর পরের বার থেকে প্রযোজককে বলব, শুধু আমাদের পরিবারের জন্যই ছবি বানান। আমরা একাই সব টাকা তুলে দিতে পারব।”
অঙ্কুশের মতে, স্যান্ডি আসলে খুবই শিশুসুলভ। তাই এমন কথাবার্তা বলছেন। স্যান্ডিকে অভিনেতা হিসেবে তিনি পছন্দ করেন বলেও জানালেন।
তবে সত্যিই কি স্যান্ডিকে ফেসবুক থেকে ব্লক করে দিয়েছেন অভিনেতার দল? কারণ এখনও অস্পষ্ট। মাস কয়েক আগে ফিরে গেলে কয়েকটি সূত্র পাওয়া যাবে। নেটমাধ্যমে অঙ্কুশ আর স্যান্ডির সম্পর্কের ইতিহাস খুব শান্তিপূর্ণ নয়।
অঙ্কুশের প্রেমিকা, অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেন একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। ছবিতে দেখা গিয়েছিল, সমুদ্রসৈকতে শুয়ে রয়েছেন অভিনেত্রী। সেই ছবির মন্তব্য বাক্সে স্যান্ডি একটি ছবি পোস্ট করেন। দেখা যায়, সমুদ্রসৈকতের উপর একটি হাতি শুয়ে রয়েছে। হাতির শুয়ে থাকার ভঙ্গি হুবহু মিলে যায় ঐন্দ্রিলার সঙ্গে। এ কথা স্পষ্ট, হাতির সঙ্গে অভিনেত্রীর তুলনা করেন স্যান্ডি। তা ছাড়া আরও একটি ছবিতে স্যান্ডি তারকা যুগলকে একই ভাবে কটাক্ষ করেন। তাঁদের দু’জনকে যথাক্রমে হাতি ও সাপের সঙ্গে তুলনা করেন। এ ভাবে প্রেমিকার শরীরের আকার নিয়ে কুমন্তব্য মেনে নিতে না পেরেই কি স্যান্ডিকে ব্লক করেছেন অঙ্কুশ?