বাংলা গানে অন্য ধারা আনার আরেক নাম কিন্তু শিলাজিৎ মজুমদার। গানের শুরুতে শ্রোতাদের সিট বেল্ট বেঁধে নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন শিলাজিৎ। কিন্তু কেন? কারণ তাই তো চেয়েছিলেন সর্বনাশ! গানে যে সর্বনাশা বানের জল আনতে চেয়েছিলেন তিনি, তার সিংহ ভাগ জুড়ে আছে তাঁর সঙ্গীতায়োজন। সেখানে রয়েছে কুলকুচির শব্দ, পিংপং বলের ড্রপ খাওয়ার শব্দ, কাকের ডাক, চুমুর লেপ্টে থাকা। সুরের সঙ্গে মিলে গিয়েছে ‘বেসুর’ শব্দও যেমন ‘অ্যান্টেনা’, ‘যা পাখি’, ‘ঝিন্টি’ তার উদাহরণ। কী থেকে এমন ভাবনার শুরু তা জানালেন শিলাজিৎ নিজে।
শিলাজিৎ শব্দ ও নিজের সঙ্গে সঙ্গীতের যোগ নিয়ে জানান যে ‘যা পাখি উড়তে দিলাম তোকে’ গানটি শুরু হয় একটি টেলিফোনের বার্তালাপ দিয়ে। তার পরে আসে ফোন কেটে দেওয়ার পরের একটি টোন, যার কাছাকাছি একটি শব্দ শিলাজিৎ ব্যবহার করেছেন ‘ঝিন্টি’ গানটিতেও। আর তার পরে বাকি শব্দের সঙ্গে একটা পিংপং বল গড়িয়ে যাওয়ার শব্দ শোনা যায়। কিন্তু কেন করা এগুলো?
শিলাজিৎ জানান, তিনি যখন থেকে ভেবেছিলেন গান গাইবেন, তখন থেকেই তাঁর অন্য রকম হওয়ার ইচ্ছা ছিল। ‘সঙ্গীতের সংজ্ঞা কী?’ নিয়ে তিনি বলেন যে কোনও শব্দই নাকি গান। একটা চুমুর শব্দের থেকে মিষ্টি সঙ্গীত তো আর কিছু হতে পারে না জগতে। শেক্সপিয়রের কথায় প্রেমিক-প্রেমিকার কথার আদানপ্রদানে যে কথা হয়, সেটাই তো সঙ্গীত।
তাঁর গানে এই চুমুর শব্দ এসেছে বলা ভালো দাপটের সঙ্গেই এসেছে। আছে অ্যান্টেনা গানটিতে। সেখানে এক দিকে ঢেকুরের শব্দ আছে, শিসের শব্দ আছে, তেমনই আছে সেই বিখ্যাত লেখনি, ‘একটা ডুব্লু ডিলু, ডিবটু ডিলু ডাম….’, আর এই অংশের শেষেই এসেছে সেই চুমুর শব্দ। গানের মাঝামাঝি থেকে বেশ অর্ধেক মিনিট জুড়ে গানের তালের সঙ্গে চলেছে সেই শব্দপ্রয়োগ।